আমরা গুরু শিষ্যের অনেক কাহিনী অনেক গল্পে পড়েছি । মহাভারতের একলব্য ও দ্রোনের কথা আমরা অনেকেই জানি । যেখানে গুরু দ্রোন অর্জুনকেই সর্বাধিক অস্ত্রবিদ্যা দেবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন । আর এক নীচু জাতের একলব্য দ্রোনের কাছে শিষ্যত্ব গ্রহন করতে এলে দ্রোন তাকে প্রত্যক্ষ্যান করেন । কিন্তু একলব্য তাঁকেই মনে মনে গুরুর
কল্পনা করে বনে গিয়ে তাঁর মুর্তি প্রতিষ্ঠা করে নিজে নিজে অস্ত্র শিক্ষা শিখতে থাকে । একদিন এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটলো কৌরব আর পাণ্ডব রা একদিন বনে গিয়ে একলব্য কে দেখতে পায় । এবং একলব্য তাকে গুরু দ্রোনের শিষ্য বলে পরিচয় দেন আর এক অদ্ভুত অস্ত্রবিদ্যা প্রদর্শনের পরিচয় দেয় । গুরু দ্রোনের কাছে সেই খবর পৌছয় । কিন্তু তিনি তো অর্জুন কেই তার সর্বোচ্চ অস্ত্রবিদ্যা দেবেন তাই তিনি একলব্যের কাছে গেলেন আর গুরুদক্ষিনা হিসাবে চাইলেন একলব্যের ডানহাতের বুড়ো আঙুল ।গুরুপ্রান একলব্য নির্দ্বিধায় তা দান করলেন ।
যদিও এতটা কঠিন ঘটনা ঘটেনি তাও ভারতীয় বিখ্যাত বাঁশিবাদক হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার জীবনেও ঘতেছিলো ছোট্ট একটা ঘটনা শিষ্যত্ব গ্রহন করার সময় । তখন তিনি নামকরা একজন বাঁশিবাদক । এমনকি অল ইন্ডিয়া রেডিওতেও তিনি তখন অনুষ্ঠান করছেন । একদিন তিনি ঠিক করলেন অন্নপূর্ণা দেবীর শিষ্যত্ব গ্রহন করবেন ।অন্নপূর্ণা দেবী ছিলেন বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ আলাউদ্দিন খাঁর মেয়ে । হরিপ্রসাদ তখন ডানহাতে বাঁশি বাজাতেন । কিন্তু অন্নপুর্ণা দেবী তখন এক শর্ত দিলেন বললেন একমাত্র বাঁহাতে বাঁশি বাজালে তবেই তিনি তাঁর গুরুমা হবেন । হরিপ্রসাদ তাঁর শর্ত মেনে নিলেন আর তখন থেকেই বাঁহাতে বাঁশি বাজাতে শুরু করলেন ।
বড়ো বড়ো মানুষদের বড়ো সধকদের বোধহয় এরকমই কিছু গুন থাকে কিছু ভক্তি থাকে তাঁদের গুরুর প্রতি ।
No comments:
Post a Comment