3D ছবি নেওয়ার পদ্ধতিঃ--


আসলে 3D বলতে আমারা যতটা জটিল ভাবি তা কিন্তু ততটা জটিল নয়। আমাদের দু-নেত্র দৃষ্টি হওয়ায়
আমরা যখন কোনো বস্তুকে দেখি তা মস্তিকে একটি আনুভুতির সৃষ্টি করে। দুটি চোখ আসলে দুটি লেন্স কিন্তু আমরা  দুটি ছবি দেখিনা । নির্দিষ্ট দূরত্বে বসানো দুটি লেন্স দুটি ছবি নিয়ে মস্তিষ্কে সম্মিলিত ভাবে একটি আনুভুতির সৃষ্টি করে। তাই আমরা দূরত্বকে ভালো ভাবে বুঝতে
পারি। অর্থাৎ এক চোখে দেখলে আমাদের দূরত্ব বুঝতে অসুবিধা হয়ে থাকে। ( এক চোখ বন্ধ করে কিছুটা দুরত্বে সূচে সুতা পরানোর চেষ্টা করুন আসুবিধা টা বুঝতে পারবেন। ) কিন্তু আমরা যখন কাগজ বা সাধারন টিভি তে ছবি দেখি তা 3D আনুভুতির সৃষ্টি করতে পারে না কারন তা একটি মাত্র লেন্স দিয়ে তোলা ছবি।
তাই 3D ছবি তুলতে হলে আমাদের দুটি লেন্স কে নির্দিষ্ট দূরত্বে রেখে দুটি ছবি তুলতে হবে। এবং সেই ছবি দুটিকে একই সাথে দুটি চোখ -কে আলাদা আলাদা ভাবে দেখতে হবে তবেই তা আমাদের মস্তিষ্কে 3D অনুভুতির সৃষ্টি করবে। এই পদ্ধতি কে বলা হয় আনাগ্ল্যফ থ্রিডি (Anaglyph 3D)। (উল্লেখ্য 3D মুভি এই পদ্ধতিতেই বানানো হয়ে থাকে।) এই পদ্ধতি তে ছবি দেখতে বানানো হয়েছে বিশেষ 3D চশমা (যার সরল রূপ আমরা বাড়িতে সহজেই বানাতে পারি।) Anaglyph 3D চশমা অনেক গুলি কালারের হয়ে থাকে তবে তার মধ্যে লাল-সায়ান (red-cyan) -ই বেশি পরিচিত। (নোটঃ সায়ান হল একটি কালার যা অনেক টা আকাশি কালারের মত হয়ে থাকে। ) এক্ষেত্রে ছবি নেওয়ার সময় একটি লাল মাধ্যমে ও আরেকটি সায়ান মাধ্যমে নেওয়া হয়। আর 3D চশমায় লাগানো থাকে দুটি কালারের কাঁচ একটি লাল আরেকটি সায়ান কালারের ( কোনটা লেফট সাইডে আর কোন টা রাইট সাইডে লাগানো থাকবে তা নির্ভর করে ছবি টি তোলার সময় কি ভাবে তোলা হয়েছে তার উপর।) এবার ছবি টি যখন চশমার সাহায্যে দেখা হয় তখন লাল কাঁচ, লাল মাধ্যমে তোলা ছবি কে চোখে আসতে বাধা দেয়, তখন সেই চোখ শুধুমাত্র সায়ান মাধ্যমে তোলা ছবি দেখতে পায়   আর একই ভাবে সায়ান কালারের চশমা যুক্ত চোখ শুধুমাত্র লাল মাধ্যমে তোলা ছবি দেখতে পায়। ফলে আমরা একই সাথে দুটি ছবি দুটি চোখে আলাদা ভাবে দেখি। তাই 3D আনুভুতির সৃষ্টি হয়। আর চশমা ছাড়া এই ছবি দেখলে দুটি ছবি মনে হয়। নীচে একটা 3D ছবি দেওয়া হল।
 
  
Share:

No comments:

Post a Comment

কিছু কথা

আমি দেবায়ন সেন । ভালো লাগে লেখালেখি করতে , সেই কারনেই এই ব্লগের সৃষ্টি । পড়াশোনা গনিতের উপরে কিন্তু ভালো লাগে গান, জাগ্লিং, মাউথর্গ্যান ও প্রোগ্রামিং । বিজ্ঞানের উপরে লেখার জন্যই এই ব্লগ তৈরী করেছিলাম। যাইহোক এখন তা শুধু মাত্র ব্লগের পরিনত হয়েছে । বিজ্ঞানের পোস্টের জন্য ফেসবুকে দেবায়নের বিজ্ঞান ব্লগ (fb.com/blog.debayan)এর ঠিকানায় আছে। জানিনা এই ব্লগে কেউ আসবে কিনা । না এলেও ক্ষতি নাই । ভালোলাগে তাই লিখি ,ব্লগস্পট যতদিন আছে এই লেখাগুলও থাকবে বলেই মনে হয় । যদি কেউ গুগুল সার্চ করে বা কোনো লিঙ্কের মাধ্যমে এখানে পৌঁছয় আর কিছু পোস্ট সামান্য তম উপকারে আছে তাহলেই এই ব্লগের সার্থকতা ।

Recent Posts