টাওয়ার অফ হানোই (Tower of Hanoi):

  টাওয়ার অফ হানোই হল একপ্রকারের ম্যাথামেটিক্যাল গেম বা পাজেলও বলা যেতে পারে। এটা প্রথম বানিয়ে ছিলেন গনিতবিদ লুকাস। দেখতে খুবই সাদামাটা কিন্তু খুব মজার। এখানে থাকে তিনটি দন্ড আর কিছু ডিস্ক (disk)  ,ডিস্ক গুলির বৈশিষ্ট্য হল এগুলি সমান আকারের নয় । যেগুলি একটি দন্ডের উপর পরপর সাজানো

থাকবে বড় থেকে ছোটো আকারে অর্থৎ সবচেয়ে বড় ডিস্কটা থাকবে সবচেয়ে নীচে এইভাবে পরপর অন্য গুলি।আর বাকি দন্ডগুলি ফাঁকা থাকবে। ডিস্ক কটা থাকবে তা নির্ভর করবে গেমটির উপর তিনটি থেকে শুরু করে অনেক পর্যন্ত হতে পারে।

Tower_of_Hanoi

                                 (ছবি টি উইকিপিডিয়া থেকে সংগৃহিত)

এবার গেমটির সমাধানের পালা। এবার ডিস্ক গুলি কে আরেকটি ফাঁকা দন্ডের উপর একই ভাবে সাজাতে হবে কয়েকটি নিয়ম মেনে। ১) একবারে একটির বেশি ডিস্ক এক দন্ড থেকে অন্য দন্ডতে রাখা যাবে না। ২)কোনো দন্ড থেকে শুধুমাত্র উপরের ডিস্ক-কেই সরানো যাবে। ৩) কোনো ডিস্ককে তার চেয়ে ছোটো কোনো ডিস্কের ওপর রাখা যাবে না।

গনিত প্রয়োগ করে দেখা গেছে তিনটি ডিস্ক এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম ৭টি চাল (এখানে ১টি চাল মানে ১টি ডিস্ক সরানো) দিয়ে পাজেলটির সমাধান করা যাবে। আর n সংখ্যক ডিস্ক এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম 2n-1 সংখ্যক চাল দিতে হবে।

নীচে একটি অ্যানিমেশানের সাহায্যে ৩টি ডিস্ক-এর সাহায্যে সলিউশান টি দেখানো হল—

Tower_of_Hanoi_4

  (ছবি টি উইকিপিডিয়া থেকে সংগৃহিত)

টাওয়ার অফ হ্যানোই নিয়ে আবার একটি পৌরাণিক ঘটনা আছে। ঘটনাটি এক প্রাচীন ভারতীয় মন্দিরের । ব্রহ্মা যখন বিশ্ব সৃষ্টি করেন তখন তিনি এক মন্দিরের কিছু পুরহিত কে একটি কাজ দিয়েছিলেন ।সেখানে ছিলো তিনটি হীরার দন্ড আর ৬৪টি সোনার চাকতি বা ডিস্ক। তিনি তাদের কে বলেছিলেন কিছু নিয়ম মেনে ডিস্ক গুলিকে সাজাতে। (অর্থাৎ টাওয়ার অফ হানোই এর নিয়ম গুলি) আরো বলেছিলেন যখন তোমাদের কাজ সম্পূর্ণ হবে সেদিন-ই পৃথিবী র শেষ দিন।

যাইহোক এই প্রবলেম টা আসলে ছিলো একটা টাওয়ার অফ হানোই এর প্রবলেম যার ডিস্ক সংখ্যা ছিলো ৬৪ অর্থাৎ n=64 তার মানে এটা সল্ভ করতে 264-1=18446744073709551615 টি চাল দিতে হবে। এখন যদি সেকেন্ডে একটি করেও চাল দেওয়া যায় তাহলে লাগবে 18446744073709551615 সেকেন্ড তার মানে 584942417355 বৎসর !!

Share:

No comments:

Post a Comment

কিছু কথা

আমি দেবায়ন সেন । ভালো লাগে লেখালেখি করতে , সেই কারনেই এই ব্লগের সৃষ্টি । পড়াশোনা গনিতের উপরে কিন্তু ভালো লাগে গান, জাগ্লিং, মাউথর্গ্যান ও প্রোগ্রামিং । বিজ্ঞানের উপরে লেখার জন্যই এই ব্লগ তৈরী করেছিলাম। যাইহোক এখন তা শুধু মাত্র ব্লগের পরিনত হয়েছে । বিজ্ঞানের পোস্টের জন্য ফেসবুকে দেবায়নের বিজ্ঞান ব্লগ (fb.com/blog.debayan)এর ঠিকানায় আছে। জানিনা এই ব্লগে কেউ আসবে কিনা । না এলেও ক্ষতি নাই । ভালোলাগে তাই লিখি ,ব্লগস্পট যতদিন আছে এই লেখাগুলও থাকবে বলেই মনে হয় । যদি কেউ গুগুল সার্চ করে বা কোনো লিঙ্কের মাধ্যমে এখানে পৌঁছয় আর কিছু পোস্ট সামান্য তম উপকারে আছে তাহলেই এই ব্লগের সার্থকতা ।

Recent Posts