দেওয়ালের মাঝ দিয়ে দেখা

  1890-এর দশকে অদ্ভুত একটা জিনিস কিনতে পাওয়া যেত যার গাল-ভরা  নাম ছিল ‘এক্স-রে যন্ত্র' । বেশ মনে পড়ে তখন আমি স্কুলে পড়ি, সেই প্রথম অভিনব জিনিসটাকে দেখে আমি ভারী অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। 


এর সাহায্যে  অসচ্ছ ( opaque ) বস্তুর ভেতর দিয়েও আমি আলো দেখতে পেয়েছিলাম। শুধু যে মােটা কাগজের ভেতর দিয়ে তাই নয়—ছরির ফলার ভেতর দিয়েও দেখেছি। সত্যিকারের এক্স-রে কিন্তু ছুরির ফলা ভেদ করতে পারে না। 95 নং চিত্রে যে জিনিসটা দেখা যাচ্ছে সেটা আমার বিবৃত অদ্ভুত দর্শন যন্ত্রটার নকল। দেখলেই ব্যাপারটার ছলা-কলা ধরা পড়ে যায়। এর মধ্যে যে 45° কোণে হেলানাে চারটে আয়না আছে তা দিয়ে লক্ষ্যবস্তু থেকে আগত রশ্নিগুলােকে প্রতিফলিত ও পুনঃ প্রতিফলিত করে অসচ্ছ বাধা পার করে নিয়ে যাওয়া যায়। সামরিক বাহিনীতেও এই ধরনের একটা যন্ত্রের খুব ব্যবহার হয়। পেরিস্কোপ ( চিত্র 96 ) নামে এই যন্ত্রটার সাহায্যে সৈন্যরা শত্রুদের গতিবিধির উপর নজর রাখে অথচ নিজেদের শত্রুর গােলাগুলির মধ্যে পড়তে হয় না। পেরিস্কোপের ফুটো দর্শকের চোখ থেকে যত দূরে সরে যায়, ততই সংকুচিত হয়ে ওঠে দৃশ্যের সীমানা । দৃশ্যের সীমানা প্রসারিত করার জন্য আলোক-লেন্সের এক বিশেষ  ধরনের সমন্বয় ব্যবহার করা হয়। কিন্তু পেরিস্কোপের মধ্যে যে আলো ঢোকে তার অংশবিশেষ শোষিত হয় এই লেন্সে, ফলে প্রতিবিম্ব ঝাপসা দেখায়। এ জন্য খুব বেশি হলেও পেরিস্কোপের উচ্চতা কুড়ি মিটারের চেয়ে বাড়ানো সম্ভব হয় না।


 আর এতেই তাে ছাদের কাছে পৌছে গেলাম। এর চেয়ে লম্বা পারিস্কোপের প্রতিবিম্ব ঝাপসা হয় এবং দশের সীমাও সংকীর্ণ হয়ে আসে। তার উপর আবহাওয়া মেঘলা হলে তাে কথাই নেই। সাবমেরিনের পরিচালকরাও শত্রু জাহাজ আক্রমণ করার সময়ে পেরিস্কোপেই এদের দেখে। সামরিক বাহিনীর পেরিস্কোপের তুলনায় এটি অনেক জটিল। জলের নিচে থাকার সময় এর মুখটা শুধু জেগে থাকে। কার্যপ্রণালীর দিক থেকে দুই এক, এর মধ্যেও আয়নাগলাে ( বা প্রিজম ) একইভাবে সাজানাে। থাকে ( চিত্র 97 )। 
Share:

No comments:

Post a Comment

কিছু কথা

আমি দেবায়ন সেন । ভালো লাগে লেখালেখি করতে , সেই কারনেই এই ব্লগের সৃষ্টি । পড়াশোনা গনিতের উপরে কিন্তু ভালো লাগে গান, জাগ্লিং, মাউথর্গ্যান ও প্রোগ্রামিং । বিজ্ঞানের উপরে লেখার জন্যই এই ব্লগ তৈরী করেছিলাম। যাইহোক এখন তা শুধু মাত্র ব্লগের পরিনত হয়েছে । বিজ্ঞানের পোস্টের জন্য ফেসবুকে দেবায়নের বিজ্ঞান ব্লগ (fb.com/blog.debayan)এর ঠিকানায় আছে। জানিনা এই ব্লগে কেউ আসবে কিনা । না এলেও ক্ষতি নাই । ভালোলাগে তাই লিখি ,ব্লগস্পট যতদিন আছে এই লেখাগুলও থাকবে বলেই মনে হয় । যদি কেউ গুগুল সার্চ করে বা কোনো লিঙ্কের মাধ্যমে এখানে পৌঁছয় আর কিছু পোস্ট সামান্য তম উপকারে আছে তাহলেই এই ব্লগের সার্থকতা ।

Recent Posts